শুক্রবার , ০৪ জুলাই ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:২৮, ৩ জুলাই ২০২৫

অসলোতে আগামী সপ্তাহে বৈঠকে বসছে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান

অসলোতে আগামী সপ্তাহে বৈঠকে বসছে যুক্তরাষ্ট্র-ইরান
ছবি: সংগৃহীত

পুনরায় তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা শুরু করার লক্ষ্যে আগামী সপ্তাহে নরওয়ের রাজধানী অসলোতে ইরানের সঙ্গে বৈঠকে বসার পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ অসলোতে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন।

 

আলোচনা পরিকল্পনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দু’টি সূত্রের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওসের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ওই সূত্র বলছে, অসলো বৈঠকের বিষয়ে এখন পর্যন্ত নির্দিষ্ট তারিখ চূড়ান্ত করা হয়নি এবং কোনও পক্ষই এই বৈঠকের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি।

 

গত মাসে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় নজিরবিহীন সামরিক হামলার নির্দেশ দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে এটিই প্রথম সরাসরি আলোচনা হতে যাচ্ছে।

 

হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে বলেছেন, ‘‘এই মুহূর্তে আমাদের কাছে অসলো ভ্রমণ সংক্রান্ত কোনও ঘোষণা নেই।’’ আর জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের মিশন এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

 

ওই দুই সূত্র বলেছে, ইসরায়েল ও ইরানের ১২ দিনের যুদ্ধ চলাকালীন এবং যুদ্ধের পর থেকে উইটকফ এবং আরাঘচির সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে ইসরায়েলের সঙ্গে ইরানের ওই যুদ্ধের অবসান ঘটে। ওমান ও কাতারের সরকারি কর্মকর্তারাও এই আলোচনায় মধ্যস্থতা করেন।

 

যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে পৌঁছানোর পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহ নেই বলে জানিয়েছিল ইরান। তবে বর্তমানে ইরানের সেই মনোভাব কিছুটা নমনীয় হয়েছে। ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেল-১২ ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য বৈঠকের বিষয়ে প্রথম খবর প্রকাশ করেছে।

 

ইরানের হাতে বর্তমানে প্রায় ৪০৮.৬ কেজি (৯০০ পাউন্ড) উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে। যা ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সমৃদ্ধ এবং এটি বেসামরিক ব্যবহারের চেয়ে অনেক বেশি হলেও পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মাত্রার নিচে। এই ইউরেনিয়াম আরও সমৃদ্ধ করলে তা দিয়ে ৯টির বেশি পারমাণবিক বোমা তৈরি সম্ভব।

 

ইসরায়েল ও মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, এই ইউরেনিয়াম এখন ইরানের তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে ‘‘বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায়’’ রয়েছে। ইরানের নাতাঞ্জ ও ফোরদোর সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র এবং ইসফাহানের ভূগর্ভস্থ সুরঙ্গে এই ইউরেনিয়াম রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ হামলায় এসব স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

 

চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকে পার্লামেন্টে পাশ হওয়া নতুন একটি আইনের বাস্তবায়ন শুরু করেছে ইরান। এর ফলে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে তেহরান।

 

বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরাঘচি বলেছেন, ‘‘ইরান এখনও পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি (এনপিটি) এবং এর সুরক্ষা চুক্তির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ।

 

তিনি বলেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের অবৈধ হামলার প্রেক্ষিতে পার্লামেন্টে পাশ হওয়া নতুন আইন অনুযায়ী, আইএইএর সঙ্গে আমাদের সহযোগিতা এখন থেকে নিরাপত্তার স্বার্থে ইরানের সর্বোচ্চ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে পরিচালিত হবে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়