অবৈধ অভিবাসী-শীশা ব্যবহারে যুক্তরাজ্যের ‘ক্যাফে ডায়ানা’ লাইসেন্স

লন্ডনের কেন্সিংটনের ঐতিহ্যবাহী ‘ক্যাফে ডায়ানা’ এখন লাইসেন্স বাতিলের মুখোমুখি। ব্রিটিশ রাজপরিবারের প্রয়াত সদস্য প্রিন্সেস ডায়ানার নামে নামকরণ করা এই ক্যাফেতে অবৈধ অভিবাসী কর্মী নিয়োগ, শ্রমিক নির্যাতন এবং অননুমোদিত শীশা পরিবেশন–এই তিনটি গুরুতর অভিযোগে হোম অফিস তদন্ত চালাচ্ছে।
২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে চারবার আলাদা অভিযান চালায় হোম অফিস ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। এতে দেখা যায়, ক্যাফেটিতে আলবেনিয়া ও মিশর থেকে আসা সাতজন অবৈধ অভিবাসী কর্মরত ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে ক্যাফেতে কাজ করছিলেন।
একটি অভিযানে ক্যাফের বেজমেন্টে ৪৫টি লেবেলবিহীন শীশা টোব্যাকো পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, বেজমেন্টটি অবৈধ শীশা লাউঞ্জে রূপান্তরিত করা হয়েছিল।
অভিযোগ আছে, কিছু কর্মীকে বিনা বেতনে কেবল খাবার দিয়ে কাজ করানো হতো। এমনকি এক শেফের ভিসার মেয়াদ ২০১৫ সালে শেষ হয়ে যাওয়ার পরও তাকে কাজে রাখা হয়, এবং শুধুই খাবার দেওয়া হতো।
ক্যাফেটির মালিক আবদুল-বাসিত দাউদ স্বীকার করেন, অনেক সময় তিনি নগদ বেতনে কর্মী নিয়োগ করতেন এবং ‘রাইট টু ওয়ার্ক’ যাচাইয়ের দায়িত্ব নিজেই পালন করতেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে হোম অফিস চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ক্যাফেটিকে ১ লাখ ৩৫ হাজার পাউন্ড জরিমানা করে।
‘ক্যাফে ডায়ানা’ একসময় রাজপরিবারের সদস্য প্রিন্সেস ডায়ানার প্রিয় জায়গা ছিল। ক্যাফের দেয়ালে এখনো ডায়ানার তোলা ছবি ঝুলছে। মালিক জানান, প্রিন্সেস ডায়ানা সন্তানদের নিয়ে প্রায়ই এখানে নাশতা করতে আসতেন।
ক্যাফের আইনজীবীরা জানান, তারা অভিযোগ জানার সঙ্গে সঙ্গে ভাড়াটিয়া ও সংশ্লিষ্ট অবৈধ কর্মকাণ্ডে জড়িতদের বের করে দিয়েছেন। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে ক্যাফে কর্তৃপক্ষ স্বেচ্ছায় তিন মাসের জন্য লাইসেন্স স্থগিত রাখার প্রস্তাব দিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে কর্মী যাচাইয়ের পূর্ণাঙ্গ ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিষয়টি এখন স্থানীয় কাউন্সিলের বিবেচনায়, যারা খুব শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানাবে। তবে দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য বহনকারী এই ক্যাফে আইনি জটিলতা ও জনমতের চাপের মুখে পড়েছে, যা ভবিষ্যতে এর কার্যক্রম স্থায়ীভাবে প্রভাবিত করতে পারে।