আলবেনিয়া ডিক্রি’ এখন আইনে পরিণত, ঝুঁকিতে বাংলাদেশিসহ অভিবাসীরা

ইতালিতে অবৈধ অভিবাসীদের আলবেনিয়ায় স্থানান্তরের প্রক্রিয়া এখন থেকে আইনি কাঠামোর আওতায় পরিচালিত হবে। বিতর্কিত ‘আলবেনিয়া ডিক্রি’ পার্লামেন্টে আস্থা ভোটের মাধ্যমে আইনে পরিণত হয়েছে, যার ফলে বাংলাদেশিসহ নিরাপদ দেশ হিসেবে চিহ্নিত অন্যান্য দেশের বহু অভিবাসী নতুন সংকটে পড়তে পারেন।
ইতালির পার্লামেন্টে অনুষ্ঠিত ভোটাভুটিতে ১৪৭ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ৯০ জন প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন। ৫৬ জন বিরোধিতা করেন এবং একজন ভোটদান থেকে বিরত থাকেন।
প্রায় এক সপ্তাহ আগে প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনির সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রস্তাবটি উপস্থাপন করে। আইনটি পাস হওয়ার পর মেলোনি বলেন, “এই আইন মানবপাচার রোধে আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।”
নতুন আইনে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে আলবেনিয়ায় নির্মিত অভিবাসী কেন্দ্রগুলোতে অবৈধ অভিবাসীদের পাঠানো হবে। সেখানে তাদের আশ্রয় আবেদন যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করা হবে মাত্র সাত কর্মদিবসের মধ্যে। আবেদন গৃহীত হলে পুনরায় ইতালিতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে, আর নাকচ হলে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
আইনে পূর্ববর্তী ধারণা থেকে সরে এসে বলা হয়েছে, এগুলো ‘আটক কেন্দ্র’ নয় বরং ‘ডিপোর্ট সেন্টার’। অভিবাসীরা চাইলে বাইরে চলাফেরা করতে পারবেন, তবে তাদের হাতে থাকবে ইলেকট্রনিক ট্র্যাকার ডিভাইস, যাতে নিরুদ্দেশ হওয়া সম্ভব না হয়।
এছাড়া আবেদন ইতোমধ্যে নাকচ হওয়া নয়, এমনকি যেসব আবেদন এখনো প্রক্রিয়াধীন, সেসব অভিবাসীকেও আলবেনিয়ায় পাঠানোর বিধান রাখা হয়েছে।
ইতালি বর্তমানে যেসব দেশকে ‘নিরাপদ’ হিসেবে বিবেচনা করে, বাংলাদেশ সেই ২৩টি দেশের তালিকায় রয়েছে। ফলে এসব দেশের অভিবাসীরা আশ্রয় আবেদন করলে তার গ্রহণযোগ্যতার সম্ভাবনা কম, এবং তাদের আলবেনিয়ায় স্থানান্তরের ঝুঁকি বেশি।
আইনটি নিয়ে শুরু থেকেই ছিল তীব্র বিতর্ক। রোমের আপিল বিভাগসহ বিভিন্ন আদালত উল্লেখ করেছে—ইউরোপীয় আইন অনুযায়ী, ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের ইতালিতেই প্রাথমিক আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
“এই আইন এক বিলিয়ন ইউরো ব্যয়ে মাত্র ১৫৭ জন অভিবাসী স্থানান্তর করে মানবাধিকারের এক কলঙ্কজনক নজির স্থাপন করেছে।”
নিরাপত্তা সহযোগিতার অংশ হিসেবে ইতালি ইতোমধ্যে আলবেনিয়াকে দুটি টহল নৌকা উপহার দিয়েছে এবং অভিবাসী কেন্দ্রগুলোর সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।