‘দুর্দান্ত’ ইলন মাস্ককে বিদায় জানালেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রশাসন থেকে বিশ্বের শীর্ষ ধনী উদ্যোক্তা ইলন মাস্ককে বিদায় জানিয়েছেন। ৩০ মে শুক্রবার ওভাল অফিসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মাস্কের বিদায়ের ঘোষণা দেন ট্রাম্প। এ সময় ইলন মাস্ক নিজেও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মাস্কের প্রশংসায় ট্রাম্প বলেন, “ইলন এক কথায় দুর্দান্ত। তাঁর পরিশ্রম ও নেতৃত্বে আমরা অল্প সময়েই প্রশাসনে বড় পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছি। এই পরিবর্তন আনতে অন্যথায় আমাদের কয়েক প্রজন্ম লেগে যেতো।”
তিনি আরও বলেন, “আজ তিনি প্রশাসন ছাড়ছেন, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি—এটি শেষ নয়। ভবিষ্যতে তিনি আমাদের সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত থাকবেন।”
২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রচারাভিযানে বড় অঙ্কের অর্থ অনুদান দেন ইলন মাস্ক। নির্বাচনে জয়লাভের পর ট্রাম্প তাঁকে উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেন এবং পরে ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি (ডজ)’ বিভাগের প্রধান পদে বসান। এই বিভাগের মূল দায়িত্ব ছিল সরকারি ব্যয় কমানো ও প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি করা।
তবে মাস্কের অধীনে নেওয়া কিছু কড়া পদক্ষেপ—যেমন: হাজার হাজার সরকারি চাকরি বাতিল, বৈদেশিক সহায়তা বন্ধ, গবেষণা ও উন্নয়ন খাতে ভর্তুকি হ্রাস—নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক ছিল। এসব পদক্ষেপে ট্রাম্প প্রশাসনের জনপ্রিয়তা ব্যাপকভাবে কমে যায়। আদালতে একাধিক মামলা হয়, এবং কংগ্রেস এখনও ডজকে সরকারি বিভাগ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।
সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের একটি নতুন বিল—যেখানে কর মওকুফ ও প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধির কথা বলা হয়—নিয়ে মাস্ক প্রকাশ্যে সমালোচনা করেন। তাঁর মন্তব্য ছিল, “একটি বিল বড় হতে পারে, অথবা সুন্দর। দুটো একসঙ্গে হওয়া অসম্ভব।”
পরবর্তীতে ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মাস্ক জানান, তিনি ব্যবসায়িক কাজে ফিরে যেতে চান এবং তাঁর মূল কোম্পানিগুলোতে বেশি সময় দিতে চান। বর্তমানে তিনি এক্স (সাবেক টুইটার), টেসলা ও স্পেসএক্স-এর মালিক।
মাস্ক বলেন, “আমি মনে করি ডজ তার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছে। ভবিষ্যতেও তারা সফল হবে। কিন্তু এখন সময় হয়েছে নিজের পুরোনো জায়গায় ফেরার।”
ট্রাম্প প্রশাসন ও মাস্কের দূরত্ব, সমালোচনা ও নীতিগত বিরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এই বিদায় অনেকটাই প্রত্যাশিত ছিল বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
