ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত ৭৬ জন

ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় গত শুক্রবার (২৩ মে) ভোর থেকে গাজা উপত্যকায় অন্তত ৭৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। চলমান হামলায় হতাহতের সংখ্যা দ্রুতই বাড়ছে বলে জানাচ্ছে স্থানীয় সূত্র। খবর আল-জাজিরা।
গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে একটি পরিবারের বাড়িতে চালানো বোমা হামলায় প্রায় ৫০ জন নিহত বা নিখোঁজ হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আল-জাজিরাকে জানান, “ইসরায়েলি বাহিনী যেন মজা করেই সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে।”
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গাজায় সংঘর্ষ এখন ‘এই নির্মম যুদ্ধের সবচেয়ে নিষ্ঠুর পর্যায়ে’ পৌঁছেছে।
তার ভাষায়, যখন ফিলিস্তিনিরা অনাহারে ধুঁকছে, তখন ইসরায়েল মাত্র এক চামচ পরিমাণ সাহায্য ঢোকাতে দিচ্ছে, আর অবরুদ্ধ উত্তরাঞ্চলে তো কিছুই পৌঁছাচ্ছে না।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ইসরায়েলি আগ্রাসনে অন্তত ৫৩ হাজার ৯০১ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ২২ হাজার ৫৯৩ জন আহত হয়েছেন।
সরকার পরিচালিত মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা হাজারো মানুষ এখনো নিখোঁজ, যাদের অধিকাংশকেই মৃত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। এতে করে প্রকৃত নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হন এবং ২০০-এর বেশি মানুষ জিম্মি করা হয় বলে জানায় ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
সর্বশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী, গাজার উত্তরাঞ্চলে এখনো কোনো ধরনের মানবিক ত্রাণ পৌঁছায়নি। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যে, সেখানে অচিরেই দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে। অনেক শিশুর মৃত্যু ঘটছে অপুষ্টিজনিত কারণে, খাবার ও ওষুধের ঘাটতি প্রকট।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে গাজার অবকাঠামো সম্পূর্ণরূপে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং ত্রাণ ঢুকতে না পারায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জরুরি হস্তক্ষেপ ছাড়া এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।