শনিবার , ২১ জুন ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৬:১০, ২৪ মে ২০২৫

আপডেট: ১৬:১৫, ২৪ মে ২০২৫

‘ইহুদি-বিদ্বেষ’ মন্তব্যে নেতানিয়াহু ফের পশ্চিমা সমালোচনার মুখে

‘ইহুদি-বিদ্বেষ’ মন্তব্যে নেতানিয়াহু ফের পশ্চিমা সমালোচনার মুখে

গাজায় চলমান মানবিক সংকট ও ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে পশ্চিমা বিশ্ব যখন তীব্র সমালোচনা করছে, তখন চাপে পড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। ফ্রান্স, কানাডা ও যুক্তরাজ্যের নেতাদের বিরুদ্ধে "ইহুদি-বিদ্বেষ ছড়ানো ও হামাসের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার" অভিযোগ তুলে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন তিনি।

২২ মে বৃহস্পতিবার রাতে এক টেলিভিশন ভাষণে নেতানিয়াহু বলেন, “ইসরায়েল অস্তিত্বের লড়াইয়ে রয়েছে। অথচ কিছু পশ্চিমা নেতা এখন আমাদের ছেড়ে দিতে চাচ্ছে।” একইসাথে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “হামাস যে একটি জেনোসাইড-মনস্ক সংগঠন, যারা ইহুদি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়—সেটি বোঝা কি এতটাই কঠিন?”

নেতানিয়াহুর এই মন্তব্য মূলত জবাব ছিল সম্প্রতি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার-এর যৌথ বিবৃতির, যেখানে তাঁরা গাজায় অবিলম্বে মানবিক সহায়তা প্রবেশের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান এবং ইসরায়েলের অতিমাত্রায় শক্তি প্রয়োগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

নেতানিয়াহুর মন্তব্যের পরপরই ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ-নোয়েল বারো তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, “দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে কথা বললেই যদি ইহুদি-বিদ্বেষী হয়ে যাই, তাহলে আন্তর্জাতিক কূটনীতি মৃত।” তিনি নেতানিয়াহুর অভিযোগকে “মিথ্যা ও মানহানিকর” হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেন।

এদিকে, যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি ইসরায়েলের সাম্প্রতিক অভিযানকে “চরমপন্থী ও নৃশংস” বলে অভিহিত করেছেন। গাজার জাবালিয়া অঞ্চলে চালানো ইসরায়েলি হামলার ভিডিও ও ছবিগুলো জাতিসংঘ ও বিশ্ব জনমতকে নাড়া দিয়েছে।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গিডিওন সায়ার সম্প্রতি ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাসের দুই কর্মী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে এই কূটনৈতিক চাপের যোগসূত্র খুঁজছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি একে “অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার পাশাপাশি কূটনৈতিক নিরাপত্তার সংকট” হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার গাজায় খাদ্য, পানি ও চিকিৎসা সরঞ্জামের অনুপস্থিতির কথা উল্লেখ করে বলেন, “এটি একটি মানবিক বিপর্যয়, এবং অবরোধ অবিলম্বে তুলে নিতে হবে।”

তবে নেতানিয়াহুর সরকার এসব আহ্বানকে “ইসরায়েলের নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলার পাঁয়তারা” হিসেবে অভিহিত করছে।
নেতানিয়াহুর এই কৌশল কূটনৈতিক চাপ এড়ানোর চেষ্টা, না কি অভ্যন্তরীণ সমর্থন টিকিয়ে রাখার চালাকি—তা নিয়ে বিশ্লেষকরা দ্বিধান্বিত। তবে এটুকু স্পষ্ট, পশ্চিমা মিত্রদের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক এখন টানাপড়েনের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে।
 

সর্বশেষ

জনপ্রিয়