মঙ্গলবার , ২৮ অক্টোবর ২০২৫

ডেস্ক নিউজ

প্রকাশিত: ২০:৩৪, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

আপডেট: ২০:৫২, ২৫ অক্টোবর ২০২৫

বরুড়ায় বিএনপি নেতার ভাইয়ের ওপর আওয়াম লীগের নেতাকর্মীর বর্বর হামলা

বরুড়ায় বিএনপি নেতার ভাইয়ের ওপর আওয়াম লীগের নেতাকর্মীর বর্বর হামলা

কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার শীলমুড়ী ইউনিয়নের ফলকামুড়ী গ্রামে লন্ডন প্রবাসী বিএনপি নেতা মোহাম্মদ ইকবাল হোসেনের বড় ভাই বিল্লাল হোসেন (৪০)-এর ওপর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, বিল্লাল হোসেন সম্প্রতি কাতার থেকে দেশে ফেরেন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ধারণা করেন, তার ভাই ইকবাল হোসেন দেশে ফিরেছেন। এ খবরে সকালে একদল লোক বিল্লালের বাড়িতে প্রবেশ করে প্রথমে ইকবালকে খুঁজতে থাকে। তাকে না পেয়ে তারা বিল্লাল হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। এতে বিল্লাল গুরুতর আহত হন এবং তার স্ত্রীসহ আরও কয়েকজন আহত হন।

পরিবারের দাবি, হামলাকারীরা বসতভিটা দখলের চেষ্টা চালায় এবং ৬৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা বা সমপরিমাণ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার চাঁদা দাবি করে। অভিযোগ রয়েছে, এর আগেও একই পরিবারকে একাধিকবার চাঁদার দাবিতে হামলার শিকার হতে হয়েছে।

ভুক্তভোগী পরিবার জানায়, গত ২৫ আগস্ট তাদের বাবা হাফেজ আহাম্মদ এর ওপরও হামলা চালানো হয় এবং তখনও চাঁদা দাবি করা হয়। ২০২৩ ও ২০২৪ সালেও বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেনের নামে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা দায়েরের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ নেতাদের মানববন্ধনের ঘটনাও ঘটে।

এই ঘটনায় শীলমুড়ী ইউনিয়নের সাবেক আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. আমির হোসেন, তার ভাতিজা সাবেক ইউপি সদস্য মো. মিজান, এবং স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধ থাকা ব্যক্তি আবু তাহের ও মোহন মিয়া-র নাম উঠে এসেছে।

স্থানীয়রা জানান, হামলার পেছনে দীর্ঘদিনের পারিবারিক বিরোধ ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসা কাজ করছে। বিল্লালের পরিবার বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, অন্যদিকে তাদের আত্মীয়দের কেউ কেউ আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয়। ফলে দল পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পারিবারিক বিরোধও নতুন মাত্রা নিচ্ছে।

গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি হাজী রুহুল আমিন মাস্টার বলেন, “আমরা অনেকবার এই বিরোধ মীমাংসা করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু রাজনৈতিক শত্রুতা এতটাই গভীর যে সমাধান সম্ভব হয়নি।

ইকবালের বাবা হাফেজ আহাম্মদ বলেন, “আমার ছেলে ইকবালের বিরুদ্ধে থানায় দুটি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছেএকটি ২০১৫ সালে (জি আর ২৫৬/১৫) ও অন্যটি ২০২২ সালে (জি আর ৩০/২২)। এ কারণেই প্রায় ১০ বছর ধরে সে দেশে ফিরতে পারছে না। এখন আবার আমার বড় ছেলেকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়েছে।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “আমরা বারবার থানায় মামলা করতে গিয়েছি, কিন্তু বরুড়া থানা আমাদের অভিযোগ নেয়নি।

ঘটনার পর এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। গ্রামবাসীর দাবি, প্রভাবশালী মহলের কারণে আগের হামলার বিচার হয়নি। এবারও প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আরও সহিংসতা ঘটতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।

থানার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি যাচাই করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

ভুক্তভোগী পরিবার দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়