সোমবার , ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

ডেস্ক নিউজ

প্রকাশিত: ২০:২৪, ২৭ মে ২০২৫

ফেলে দেওয়া উপকরণেই বিলাসবহুল ফ্যাশন

ফেলে দেওয়া উপকরণেই বিলাসবহুল ফ্যাশন

ফ্যাশনের রাজপথে এখন নতুন বিপ্লবের নাম কেভিন জার্মানিয়ে। সুইস এই ডিজাইনার বিলাসবহুল পোশাক তৈরি করছেন ফেলে দেওয়া বা পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপকরণ দিয়ে—তাও আবার এমন নকশায়, যা পরছেন টেলর সুইফট, হাইডি ক্লুম, জেসিকা কায়ানদের মতো সুপারস্টাররা।

 

জার্মানিয়ে বলেন, “এটা শুধু পোশাক নয়, আমার মূল্যবোধের প্রকাশ। আমি অন্য কোনোভাবে কাজ করতে পারতাম না।”

 

সাধারণত ফ্যাশন ডিজাইনাররা প্রথমে নকশা করেন, তারপর উপকরণ কেনেন। কিন্তু জার্মানিয়ের পদ্ধতি একেবারেই আলাদা। তিনি বলেন, “আমি আগে উপকরণ খুঁজি—রাস্তায় ফেলে দেওয়া কিংবা অব্যবহৃত বস্তু। তারপর সেই অনুযায়ী পোশাকের নকশা করি।”

 

তাঁর সাম্প্রতিক কালেকশনে ব্যবহার করা হয়েছে রাফিয়া পামগাছ, পুরোনো পুঁতি, এমনকি ফেলে দেওয়া লিনেন ও চাদরও। এসব উপকরণ সংগ্রহের পর জার্মানিয়ে নিজের হাতে গড়েন ফ্যাশনের অনন্য সৃষ্টি।

 

১৯৯২ সালে হংকংয়ে গিয়ে জার্মানিয়ের মনে বর্জ্য উপাদান দিয়ে উচ্চমানের ফ্যাশন তৈরির ভাবনা আসে। তিনি বলেন, “সেখানে এমন পুঁতি দেখেছি, যেগুলোকে বর্জ্য বলা হচ্ছিল। অথচ এগুলো দিয়েই অনন্য কিছু তৈরি সম্ভব। ধীরে ধীরে উপলব্ধি করি—প্রায় সব উপকরণই পুনরায় ব্যবহারযোগ্য।”

 

অনেকের প্রশ্ন, পুরোনো উপকরণ দিয়ে বানানো পোশাকের দাম কেন এত বেশি? এর জবাবে ফ্যাশন সাংবাদিক গডফ্রে ডিনি বলেন, “আজকের দিনে পরিবেশ সচেতনতা ফ্যাশনের নতুন স্টেটাস। সবাই চায় বলতে—আমার পোশাক টেকসই, পুনর্ব্যবহারযোগ্য।”

 

বিশ্বের নামকরা তারকারা জার্মানিয়ের ভক্ত। মার্কিন গায়িকা টেলর সুইফট, জার্মান মডেল হাইডি ক্লুম, ব্রাজিলিয়ান অভিনেত্রী জেসিকা কায়ান—তাঁদের পোশাকেও জার্মানিয়ের ছোঁয়া।

 

জেসিকা বলেন, “জার্মানিয়ে প্রমাণ করেছেন, 'ওট কুটুয়র' মানেই বিলাসিতা নয়, তা টেকসইও হতে পারে।”

 

গডফ্রে ডিনি বলেন, “জার্মানিয়েই প্রথম যিনি কুটুয়র মানের পোশাকে আপসাইক্লিং উপকরণ ব্যবহার করেছেন। এছাড়া তিনি সুইস, যা এখনকার ফ্যাশনে বিরল। তাছাড়া, তিনি বড় কোনো পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই নিজের জেদ আর দক্ষতায় জায়গা করে নিয়েছেন।”

 

তাঁর সাফল্যের পেছনে পরিবারেরও অবদান আছে। এমনকি তাঁর দাদিও পোশাক বোনেন, এবং প্রথম কুটুয়র শো’তে সহায়তা করেছিলেন নিজ হাতে।

 

জার্মানিয়ের মতো ডিজাইনাররা দেখাচ্ছেন—টেকসইতা আর বিলাসিতা একসঙ্গে চলতে পারে। ফ্যাশন শুধু বাহ্যিক সাজ নয়, এটি হতে পারে মূল্যবোধ আর পরিবেশ সচেতনতার প্রকাশও।

সর্বশেষ

জনপ্রিয়